শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম ও তুলসী পাতার ব্যবহার
শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম বা তুলসী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে অনেক
পিতামাতারই অজানা শিশুদের বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখ হয়ে থাকে। আর অসুস্থতা থেকে
বাঁচার জন্য তুলসী পাতা অনেক উপকারি একটি ভেষজ ঔষুধ।
আপনারা যদি শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম বা তুলসী তুলসী পাতার
গুরুত্বপূর্ণ ঔষুধি গুনাগুণ সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার
জন্যই। আমরা আপনাদেরকে আজকে জানাবো শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
ও তুলসী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। তাই মনযোগ দিয়ে আমার এই লেখাটি পড়ার অনুরোধ
জানাচ্ছি।
পেজ সূচিপত্রঃ শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
আজকে আমরা আলোচনা করবো শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। চলুন জেনে
নেই কিভাবে আপনি আপনার শিশুকে তুলসী পাতা খাওয়াবেন। এ সম্পর্কে নিচে কিছু
পয়েন্ট তুলে ধরা হলো-
- প্রথমে পাঁচ থেকে ছয়টা তুলসী পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর একটু আদা নিন। অতঃপর তুলসী পাতা আর আদা একটি শিলপাটায় নিয়ে ভালো করে পিষে ভালো করে পেস্ট করে নিন।
- এই পোস্টটি আপনার শিশুকে দিনে দুইবার খাওয়ান।
- তুলসী পাতা আর আঁধার এই পেস্টটির সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন হালকা একটু মধু। এতে করে এটির তেতো ও ঝাল কমে আপনার শিশুর খাওয়ার উপযোগী হবে।
- একটি ছোট পাত্রে কিছু পানি ফুটিয়ে সেই ফুটন্ত পানিতে তুলসী পাতা একটু আদা কুচি এবং কিছু দারুচিনির গুড়া দেন।
- তুলসী পাতার মধ্যে হালকা একটু গুড় মিশিয়ে চিবিয়ে সরাসরি শিশুকে খাওয়াতে পারেন। এতে শিশুর ছোটখাটো রোগ বালাই দূর হয়ে যাবে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে শিশুদের বিভিন্ন রকমের
অসুস্থতার দেখা দেয়। তাই উপরে নিয়মগুলো মেনে যদি শিশুদের প্রতিনিয়ত তুলসী
পাতা খাওয়াতে পারেন তাহলে শিশুদের এসব অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা করতে পারবেন।
তুলসী পাতার ব্যবহার
তুলসী পাতার ব্যবহার, তুলসী পাতার সম্পর্কে বললে শেষ করা যাবে না। চিকিৎসকদের
মতে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিনিয়ত ২-৩ টি করে তুলসী পাতা
চিবিয়ে খাওয়া প্রয়োজন। মূলত ঠান্ডা, কাশি ,কৃমি, গলাব্যথা, ও হজমকারক এর চিকিৎসা
হিসেবে তুলসী পাতার ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে এইসব অসুস্থতার কারণে তুলসী
পাতার ব্যবহার ব্যাপক। যেকোনো বয়সের মানুষের জন্য এই তুলসী পাতা ব্যবহার করা যায়।
ঠান্ডা, কাশির জন্য এই তুলসী পাতার চাহিদা অনেক।
বিভিন্ন দেশের মানুষ তুলসী পাতাকে মানসিক চাপ মুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
মানসিক চাপ কমানোর জন্য তুলসীর অ্যান্টি-আক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি, ইত্যাদি ব্যবহার
করা হয়। মানুষের শরীরের কর্টিসোলের মাত্রা কমানোর জন্যও তুলসী পাতার ব্যবহার করা
হয়। এটা শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা এনে দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিভিন্ন ভাবে
প্রমাণিত হয়েছে যে তুলসী পাতা অনেক রকমের রোগ দূর করে শরীরের সুস্থতা বয়ে আনে।
তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু রোগ হচ্ছে ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের সমস্যা
অ্যাজমা,ইত্যাদি। এসব রোগ দূর করার জন্য তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়া
জ্বর হলেও তুলসী পাতা বেটে তার রস বের করে গ্লাসে নিয়ে খেলে জ্বর ভালো হয়ে যায়।
এটা জ্বর এর জন্য খুবই উপকারী। শরীরের কোনো জায়গায় কেটে গেলে তারপর তা ক্ষত হয়ে
যায়,আর সেই ক্ষত জায়গায় যদি তুলসী পাতা বেটে দেওয়া হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ক্ষত
জায়গায়টা শুকিয়ে ভালো হয়ে যায় এবং ভালো উপকার পাওয়া যায়।
আপনি আপনার ত্বকের শুষ্কতার জন্যও তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এতে থাকা
ভিটামিন সি শরীরের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি এর এসেনশিয়াল অয়েল গুলো খুব
ভালো অ্যান্টি- অক্সডেন্টের কাজ করে যা, মানুষের বয়সের ছাপ কমানোর জন্য খুবই
উপকারী।
আবার কখনো কখনো মানুষ তার যৌবন ধরে রাখার জন্যও তুলসী পাতা ব্যবহার করে থাকে।
মুখের সুন্দর্য্যকে বৃদ্ধি করার জন্য তুলসী পাতা বেটে মুখে দিতে পারেন। এতে করে
ত্বকের সুন্দর্য্য অনেক বৃদ্ধি পায়। আর এসব বিভিন্ন ক্ষেত্রে শারিরীক সুস্থতার
জন্য তুলসী পাতার ব্যবহার অতুলনীয়।
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম উপরে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে শিশুদের তুলসী
পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। তুলসী হলো ঔষধজনিত একটি গাছ। আমাদের বাড়ির
চারপাশে বা বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন রকমের গাছ গাছালি দেখতে পাওয়া যায়। মাঝেমধ্যে
তুলসী গাছ ও দেখা যায়। কিন্তু আমাদের এই তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে অজানা। তাই তুলসী পাতা কে বেশি গুরুত্ব দেই না। আপনি জানলে অবাক হবেন
যে এই তুলসী পাতা আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী? চলুন তুলসী পাতা
খাওয়ার বিভিন্ন রকমের নিয়ম জেনে নেই।
- প্রথমে গাছ থেকে অনেক গুলো তুলসী পাতা তুলে তা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর ধুয়া তুলসী পাতা গুলো শিল পাটায় ভালো ভাবে বেটে পেস্ট করে নিতে হবে। সাথে কিছু আদা কুচি দিয়ে পেস্ট করলে ভালো হয়।
- দিনে ২-৩ বার তুলসী পাতা পেস্ট গুলো খেতে পারেন। আর তুলসী পাতা বাটার পর যে রস টা পাওয়া যায় সেটা খেলে ঠান্ডা, কাশি, ভালো হয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি।
- তুলসী পাতার পেস্ট গুলোর সাথে মধু নিয়ে খেতে পারেন। এতে করে তুলসী পাতার তেতো টা চলে যাবে এবং পেস্ট টা সুস্বাদু হবে।
- ছোট একটি পাত্র নিন। এই পাত্রটি ধুয়ে পাত্রে পানি নিয়ে পানি গুলো ফুটিয়ে নিন। ফুটন্ত পানিতে তুলসী পাতা, একটু আদা, সাথে দারুচিনির গুড়ো দিন। তারপর একসাথে তা মিশিয়ে এ পানি খেতে পারেন। এটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
- তুলসী পাতায় হালকা গুড় মিশিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে এটা খেতে পারেন। এটাও শরীরের জন্য অনেক উপকারি।
প্রতিনিয়ত রুটিন পালন করে তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে বা বেটে তার রস খেতে পারেন।
ফলে শরীরের ছোট ছোট রোগ জীবাণু দূর হয়ে যাবে এবং ঠান্ডা, কাশি, গলাব্যথা, জ্বর
ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত তুলসী পাতা খান
এবং পরিবারের মানুষকে খাওয়ান। এবং বাড়ির আঙ্গিনায় তুলসী পাতার গাছ লাগিয়ে
রাখেন এতে করে নিজেদের উপকার হবে এবং আশে পাশের মানুষদের উপকার হবে।
তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা
তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা হিন্দু ধর্মের মানুষদের কাছে তুলসী একটি পবিত্র
গাছ। তারা প্রতিনিয়ত সকাল বেলায় এই গাছ কে গৃহ দেবতা হিসেবে পূজো করে থাকে। তাদের
কাছে এই গাছ অনেক পবিত্র। তবে এই গাছ শুধু তাদের পুজোর কাজেই ব্যবহৃতই হয় না বরং
তুলসী পাতা বিভিন্ন রোগ নিরাময়েও ব্যবহৃত হয়। আজকে আমরা রোগ নিরাময় এর সবচেয়ে
গুরুত্বপুর্ণ ঔষুধ তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা জানবো।
আমাদের বাড়ির আসে পাসে বা বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন রকমের গাছ-গাছালি দেখতে পাওয়া
যায়। তারমধ্যে একটি গাছ হচ্ছে তুলসী গাছ যাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দেই না। আপনি কি
জানেন যে এই তুলসী পাতা বিভিন্ন রোগ এর ঔষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে? যদি না
জেনে থাকেন তাহলে চলুন আমরা তুলসী পাতার সম্পর্কে জানি।
তুলসী আয়ুর্বেদিক ভেষজ একটি গাছ। এর পাতা চা এর স্বাধ বাড়ায় এবং এর সুগন্ধও
বাড়ায়। তাছাড়া বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে পরিত্রান দেয়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান আসার
আগে মানুষ ভেষজ ঔষুধের উপর নির্ভরশীল ছিলো। তাছাড়া ভেষজের রানী হিসেবে পরিচিতি
লাভ করে তুলসী পাতা। তুলসী পাতা কেন খাবেন চলুন সেই সম্পর্কে জানা যাক।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্ল্যাভোনয়েড, পলিফেলন
গুরুত্বপূর্ণ তেলের মতো যৌগ রয়েছে যেটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে থাকে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে গুলো শরীরের ক্ষতিকর ফ্রী র্যাডিকেল গুলোর উপর প্রভাব ফেলতে
সাহায্য করে, যেটার ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে যায় এবং কোষ গুলোকে ক্ষতি করা
থেকে রক্ষা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ তুলসীর ইমিউনোমোডুলেটরি কতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে বলে
ধারনা পাওয়া যায়। আপনি যদি প্রতিনিয়ত তুলসী পাতা বেটে তার রস পান করেন তাহলে
আপনার ইমিউন কে শক্তিশালী করতে এবং শরীরের জন্য অনেক স্থিতিস্থাপক এর জন্য
সাহাজ্য করে।
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের
গুণ যেটা সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত রয়েছি। রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য
ভরসা করতে পারেন তুলসী পাতার উপর। প্রতিনিয়ত রুটিন করে যদি সকাল বেলায় খালি
পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা
বেড়ে যাবে। তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটি যৌগ। তুলসী
পাতার এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক যৌগ আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে
সহায়তা করবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রত্যেকটি বাড়িতেই তুলসী গাছ রয়েছে। তারা তুলসী গাছের পুজো
করে থাকেন। তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক
উপকারী। তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে
এর সঠিক ব্যবহার। তুলসী পাতা যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে
পারেন তাহলে অনেক রকমের রোগবালাই থেকে নিরাপদ পাওয়া যায়। এটা খালি পেটে খেলে
পেট সব সময় ক্লিয়ার থাকে। তাছাড়া তুলসী পাতা মানুষের ত্বকের সৌন্দর্য ও বৃদ্ধি
করে।
ঠান্ডা কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়: আপনি যদি প্রতিনিয়ত সকাল
বেলায় খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে এটি আপনাকে
শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবে সুস্থ রাখবে তাছাড়া তুলসী পাতার রস খেলেও শারীরিক
মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়। তুলসী পাতার রস বা পেস্ট করা তুলসী পাতা প্রতিনিয়ত
খালি পেটে খেলে সর্দি ও কাশিসহ বিভিন্ন রকমের রোগবালাই দূর হয়ে যায়।
আপনাদের বুকে যদি কফ জমে থাকে তাহলে এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ হচ্ছে তুলসী
পাতা। প্রতিনিয়ত সকাল বেলা যদি তুলসী পাতা বেটে তার রস খেতে পারেন তাহলে বুকের
জমানো কফ দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করা: অনেক সময়ই মুখে দুর্গন্ধ হয়ে থাকে এ নিয়ে
নানান রকমের সমস্যায় ভুগতে হয়।চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, যদি প্রতিনিয়ত খালি
পেটে তুলসী পাতা খেতে পারেন তাহলে মুখের যে ব্যাকটেরিয়া থাকে তা দূর হয়ে যাবে।
মানসিক চাপ কমানো: আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অসুখ হচ্ছে মানসিক
চাপ। এই মানসিক চাপে সবসময়ই আমরা ভুগতে থাকি। তাই মানসিক চাপ কমানোর জন্য
প্রতিদিন রুটিন মোতাবেক তুলসী পাতা খান এতে করে মানসিক চাপ কমবে।
রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানো: আপনারা হয়তো প্রতিনিয়ত রোগ
প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করেই যাচ্ছেন কিন্তু কোন সফলতা পাচ্ছেন
না। প্রতিদিন যদি নিয়ম মেনে খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে চিবিয়ে খান তাহলে
আপনার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়বে। তুলসী পাতাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং
অ্যান্টিবায়োটিক যৌগ যা আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি আপনাকে সুস্বাস্থ্য
রাখতে সহায়তা করবে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাকে
প্রতিনিয়ত তুলসী পাতা বেটে তার রস খালি পেটে পান করতে হবে। এতে করে আপনার মানসিক
চাপ কমে যাবে এবং অসুস্থতা থেকে রেহাই পাবেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে তুলসী
পাতা খেলে খুবই উপকার পাবেন।
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা, তুলসী ও মধুর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের
উপকারিতা গুনাগুন। সুস্বাস্থ্যতার জন্য তুলসী ও মধুর সংমিশ্রণ খেলে সুস্থ থাকা
যায়। পাঁচ থেকে ছয়টি তুলসী পাতার নিয়ে এগুলো ভালো করে বেটে নিন। তারপর ছোট একটি
কাপ নিয়ে বাটা পেস্ট গুলো কাপের মধ্যে রাখুন। তারপর এটার সাথে নিন এক চা-চামচ
মধু। একটি চামচ দিয়ে নেড়ে নেড়ে এটির সংমিশ্রণ করে নিন। তারপর এ তুলসী ও মধুর
সংমিশ্রণটি সকালে খালি পেটে খান। আমাদের শরীরের সুস্বাস্থ্যের জন্য তুলসী ও মধুর
সংমিশ্রণটি খুবই উপকারী বয়ে আনে।
তুলসী-মধুতে রয়েছে ভরপুর ভিটামিন। এটি সুস্বাস্থ্য থাকতে সহায়তা করে। তাই সকল
রোগের ওষুধ হিসেবে হাজার বছর ধরে স্বীকৃত এই তুলসী-মধু যেটা খেলে আমাদের শরীরকে
সুস্থ রাখে। তুলসী মধু ঠান্ডার হাত থেকেও রক্ষা করে। এটি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার
হাত থেকেও শরীরকে সুরক্ষা দেয়। যদি আপনার খুসখুসে কাশি হয়ে থাকে তাহলে তুলসী-মধু
এর সংমিশ্রণ খেতে পারেন। তুলসী-মধু খাওয়ার ফলে গলায় থাকা ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে
যায় ফলে কাশি ভালো হয়ে যায়। এটি শ্বাসতন্ত্র কমিয়ে শরীরে আর আমি এনে দেয়।
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক উপরে আমরা শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম ও এর
গুনাগুণ সম্পর্কে খুটিনাটি বিষয় সমূহ তুলে ধরা হয়েছে। পরিমাণ মতো তুলসী পাতা খেলে
বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এতে ক্ষতির কোন আশঙ্কা থাকে
না। কিন্তু আমাদের যতটুকু প্রয়োজন তার থেকে বেশি খেলে হিতে বিপরীত হতেও পারে।
অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে শরীরে নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে। তাই সুস্থতার জন্য
পর্যাপ্ত পরিমাণ তুলসী পাতা খেতে হবে। যতটুকু তুলসী পাতা খাওয়া প্রয়োজন তার
থেকে বেশি খেলে নারীদের জন্য বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই নারীদের
ক্ষেত্রে পরিমাণ মতো যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু তুলসী পাতা খেতে হবে।
তুলসী পাতায় সুন্দর গন্ধের পাশাপাশি তাতে রয়েছে অসুস্থতা দূর করার বেশ ভালো
একটি গুণ। তুলসী গাছকে নানান ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত
ব্যবহারের কারণে জীবন হুমকির মুখে দাঁড়াতে পারে। তাই আমাদের সবার উচিত তুলসী
গাছকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা। তাই আমাদের পরিমাণ মতো তুলসী পাতা ব্যবহার করতে হবে।
যতটুকু প্রয়োজন তা থেকে বেশি যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে বিভিন্ন রকমের অসুবিধা
দেখা দিতে পারে।
নিম্নে অসুবিধা গুলো আলোচনা করা হলো:
- অতিরিক্ত তুলসী পাতা সেবনের ফলে মুত্র ও কাশির সাথে রক্ত বের হতে পারে যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
- যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত, সে সব রোগীদের গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
- গর্ভবতী মহিলারা যদি তুলসী পাতা অতিরিক্ত সেবন করে তাহলে এটার ফলে গর্ভপাতের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
- কাচা তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে দাতের মধ্যে কালো দাগ পড়ে যায়। ফলে দাতের ক্ষতি হয়।
- যেসব ব্যক্তিদের হার্টের ভালভের সমস্যায় রক্ত পাতলা করার জন্য ঔষধ সেবন করেন তারা তুলসী পাতা সেবনের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করবেন। তাতে করে বিভিন্ন রকমের সমস্যা হতে পরিত্রান পাবেন।
তাই আপনারা যারা বিভিন্ন রকমের অসুখ-বিসুখ থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত তুলসী পাতার
ব্যবহার করেন তারা একটু সচেতনতা অবলম্বন করে এটা ব্যবহার করবেন। এতে করে যেমন
শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকবেন তেমনি জীবনকে হুমকির মুখ থেকে বাঁচাতে পারবে।
লেখকের মন্ত্যব্যঃ শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা
করেছি শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং তুলসী পাতার ঔষধি গুনাগুণ
সম্পর্কে। তুলসী পাতা আমাদের সুসাস্থের জন্য খুবই উপকারি একটি ভেষজ ঔষধ। আশা করি
আপনি আজকে আমার এই লেখাটি পড়ে খুব ভালো ভাবে শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার
নিয়ম ও তুলসী পাতার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের কাছে
শেয়ার করে দিতে পারেন যাতে করে তারাও আমার এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে উপকৃত হতে
পারে। আপনাদের সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকে আমার এই লেখাটি শেষ করতে যাচ্ছি,
সবাই ভালো থাকবেন।
আর এইচ ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url