বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় অনেক পিতামাতাই আছেন যারা বাচ্চাদের দাঁত উঠার
সম্পর্কে বেশি একটা গুরুত্ব দেন না। বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় সম্পর্কে অনেক
মা বাবাই সচেতন নয়। যার ফলে বাচ্চাদের কখন দাঁত ওঠবে সেটার সম্পর্কে আপনাদের
সারাজীবনই অজানা থেকে যায়।
বাচ্চাদের কখন দাঁত উঠে থাকে সেটা সম্পর্কে যদি আপনার ধারণা না থেকে থাকে তাহলে
এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনারা জানবেন বাচ্চাদের দাঁত উঠা এবং বাচ্চাদের
দাঁত না উঠলে করণীয় সম্পর্কে খুটিনাটি বিষয় সমূহ নিয়ে। এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে
জানার পুরো আর্টিকেল জুরে আমাদের সাথে থাকুন।
পেজ সূচিপত্রঃ বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয়
বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয়
বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয়, মূলত সাত থেকে আট বছরের বয়সী বাচ্চাদের স্থায়ী
দাঁত উঠে থাকে। এ সময়ের মধ্যে যদি বাচ্চাদের দাঁত না উঠে তাহলে চিকিৎসকদের
সাথে পরামর্শ করুন। দাঁত না ওঠার সম্পর্কটি বংশগত ভাবেই আসে। মা-বাবা অথবা
পরিবারের কারো যদি ছোটবেলায় দাঁত উঠতে দেরি হয় তাহলে সেই সমস্যাটা শিশুদের
মধ্যে আসে। যার ফলে শিশুদের দাঁত উঠতে দেরি হয়। সে ক্ষেত্রে আপনার চিন্তা করার
কোন কারণ নেই।
এ সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে চিকিৎসকের মতঅনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
শিশুদের মুখে তাদের বয়স অনুযায়ী দুই রকমের দাঁত দেখা যায়। স্থায়ী দাঁত, দুধ
দাঁত। শিশুদের এক বছর বয়স থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত যে দাঁত উঠে বা দেখা যায়
সেটা দুধ দাঁত। শিশুদের ৬ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১১ থেকে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত
স্থায়ী দাঁত এবং দুধ দাঁত দুটোই দেখা যায় দুটোই দেখতে পাওয়া যায়।
শিশুদের ১৩ বছরের পর থেকে অর্থাৎ কৈশোরে পদার্পন করলে তখন থেকে তাদের সবগুলো
দাঁত স্থায়ী হয়ে যায়। তবে বাচ্চাদের স্থায়ী দাঁত ওঠার সময় দুধ দাঁতের নিচ
দিয়ে ওঠে। আর অন্যান্য দাঁতগুলো মুখের চোয়ালের পেছনের দিক দিয়ে ওঠে। তাই
মা-বাবাকে সব সময় শিশুর দাঁত উঠার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে।
কারণ ঠিক সময়ে সুন্দর দাঁত উঠার ওপর নির্ভর করে শিশুর মুখের সৌন্দর্য। ১৪ থেকে
১৬ মাসের মধ্যে যদি বাচ্চার দাঁত না উঠে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এবং ৫ থেকে ৮ বছরের মধ্যে যদি শিশুদের স্থায়ী দাঁত না
উঠে তাহলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার লক্ষণ, ছোটবেলায় শিশুরা খুব সুন্দর হয়ে থাকে। তারা যখন
হাসি দেয় তখন তাদের হাসি অনেক সুন্দর লেগে থাকে। আর তাদের এই সুন্দর হাসিকে
আরোও বেশি সুন্দর দেখা যায় যখন তাদের মুখে সুন্দর সাদা দাঁত ফুটে উঠে। কখন
বাচ্চাদের দাঁত উঠার সম্ভাবনা রয়েছে? বাচ্চাদের দাঁত উঠার লক্ষণ কিংবা
বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে আর সময় কত দিন সময়ের মধ্যে বাচ্চাদের দাঁত উঠতে পারে
এসব বিষয়ে মা বাবার যদি জানা থাকে তাহলে বাচ্চাদের খেয়াল রাখা সুবিধা হয়।
আরো পড়ুনঃ চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
এসব জানা থাকলে বাচ্চারা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা সেসব জানা যায়।
তাছাড়াও বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় আরো অনেক রকমের লক্ষণ দেখা যায় যেগুলো যা
মা-বাবার জানা খুবই জরুরী। এসব লক্ষণ সম্পর্কে যদি পিতা মাতার ধারণা না থাকে
তাহলে বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় বিভিন্ন প্রকারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক
রকমের বাচ্চা আছে যাদের ধৈর্যধারণ ক্ষমতা কম। এসব বাচ্চারা প্রায় সময়ই অসুস্থ
হয়ে পড়ে।
আবার অনেক বাচ্চা আছে তাদের ধৈর্যধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। সাধারণত তাদের কোন
সমস্যা হয় না। শিশুদের এই সুন্দর সুন্দর দাঁত উঠার লক্ষণ সম্পর্কে নিচে তুলে
ধরা হলো- শিশুদের দাঁত ওঠার সময় তাদের মুখের মাড়ির ভেতর যে চাপ সৃষ্টি হয়
সেটাকে প্রতিরক্ষা করার জন্য বাচ্চারা কামড়ানোর চেষ্টা করে। এর ফলে তাদের
কামড়ানোর স্বভাব তৈরি হয়ে যায়। তাই এর জন্য নরম কোমল জাতীয় খেলনাপাতি
বাচ্চার সামনে রেখে দিতে হবে যাতে করে এই খেলনা গুলোতে কামড়াতে পারে।
এতে করে বাচ্চার কোন প্রকার ক্ষত সাধন হবে না। দাঁত উঠার সময় বাচ্চাদের খুবই
যন্ত্রণা হয়ে থাকে যার ফলে তারা সাধারণত কান্না করে। যেটা আপনার বাচ্চাকে
অস্থির করে তুলতে পারে। তারা সে সময় এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য উপশম
করার চেষ্টা করে। যেটার ফলে এ সময় বাচ্চারা কোনো কিছুই খেতে বা পান করতে পারে
না। তাদের খেতে বা পান করতে কষ্ট হয়। একটা সময় আসে যখন দেখবেন আপনার বাচ্চা
কোন কিছু চুষতে আরম্ভ করে।
তাদের হাতের আঙ্গুল বা সামনে যেটা পেয়ে থাকে তাই চুষছে নাকে। এর কারণ হলো
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় হয়ে আসলে তার মুখের মাড়িতে এক ভিন্ন ধরনের চাপ
সৃষ্টি হয়। সেটা প্রতিরোধের জন্য বাচ্চারা কোন কিছুর চুষতে থাকে। তাছাড়াও এর
সাথে সাথে কামড়ানোর প্রবণতক বৃদ্ধি পায়। তাই বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় বাচ্চার
দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে বাচ্চার কোন প্রকার ক্ষতি হবে না।
বাচ্চাদের দাঁত উঠার বয়স
বাচ্চাদের দাঁত উঠার বয়স প্রত্যেকটি মা-বাবারই আকাঙ্ক্ষা থাকে যে কবে তার
বাচ্চার দাঁত উঠবে, কবে তার বাচ্চা সুন্দর দাঁত এর হাসি দিবে, কবে তার বাচ্চা
উঠে দাঁড়াতে পারবে। মা বাবা তার প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে এটা নিয়ে অনেক
উৎসাহে থাকে যে কখন তার বাচ্চার দাঁত উঠবে কিন্তু আপনাদের এটা জানতে হবে যে,
শিশুদের দাঁত ওঠার নির্দিষ্ট একটা সময় আছে কিন্তু এর কোন বিশেষ তারিখ নেই।
শিশুদের দাঁত উঠতে একটু দেরিও হতে পারে আবার খুব তাড়াতাড়ি ও দাঁত উঠে যেতে
পারে এ নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। মূলত বাচ্চাদের সর্বপ্রথম যে দাঁত উঠে থাকে
তার নাম হচ্ছে দুধ দাঁত। এর ইংরেজি নাম হলো- (Decidual Teeth or Primary Teeth)। বেশিরভাগই শিশুদের প্রথম দাঁত উঠতে দেখা যায় ৩-৬ মাসের মধ্যে।আবার কখনো
কখনো ১২ মাস কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় লেগে যায় শিশুদের দাঁত উঠতে।
খুব কম সংখ্যক সময় শিশুদের দাঁত দেখতে পাওয়া যায় তাদের জন্মের সময়ই। ৫-৬
মাস বয়সের মধ্যে শিশুদের দুধ দাঁত উঠতে দেখা গেলেও এর মূল কারণ মায়ের গর্ভে
থাকার সময়, যখন ৫-৬ মাস এর অন্তঃসত্তা থাকে। বাচ্চার অনেকগুলো দাঁত একসাথে
উঠতে পারে কিংবা একটা একটা করে মাঝেমধ্যে উঠতে পারে। বাচ্চার সবগুলো দাঁত সোজা
হয়ে নাও উঠতে পারে। তাই এতে মন খারাপের কিছু নেই পরবর্তীতে দাঁতগুলো আস্তে
আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।
সাধারণত মানুষের ২০ করে দুধ দাঁত থাকে। কিন্তু বাচ্চাদের দুই থেকে তিন বছর
বয়সের মধ্যেই ২০ টি দুধ দাঁত উঠে থাকে। তারপর বাচ্চাদের ৬-৭ বছর বয়সেই এ দুধ
দাঁত পড়তে শুরু করে। অতঃপর সেই স্থানে নতুন স্থায়ী দাঁত উঠতে শুরু করে। আর
ছেলেদের আগে মেয়েদের দাঁত পড়ে। একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে শিশুদের দাঁত
১৭-১৮ মাস পার হয়ে যাওয়ার পরেও যদি না উঠে তাহলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে
হবে।
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয়
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় করণীয় অনেক মা বাবারই তাদের শিশুদের দাঁত ওঠার সময়
যেসব দায়িত্বগুলো পালন করতে হবে তা অজানা। উপরে আমরা আলোচনা করেছি বাচ্চাদের
দাঁত না উঠলে করণীয় সম্পর্কে। বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় অনেক রকমের সমস্যা হয়ে
থাকে যেটা পিতা-মাতাকে জানার কর্তব্য। বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় অনেক কিছু
জানতে হবে যেটা আপনার বাচ্চার সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। চলুন বাচ্চার
দাঁত উঠার সময় যেসব করণীয় গুলো আছে তা জেনে নিই।
- বাচ্চারা মূলত অনেক নরম হয়ে থাকে। তাদের খুব সুন্দর হাসি এবং নরম গাল। বাচ্চাদের যেই বয়সে দাঁত উঠে থাকে সে বয়স সম্পর্কে পিতা মাতার ধারণা থাকা অতীব জরুরী। বাচ্চাদের কখন দাঁত উঠবে সেটা সম্পর্কে যদি প্রত্যেকটি মা বাবার ধারণা থেকে থাকে তাহলে বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় বিভিন্ন রকমের সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সমস্যা গুলো সংশোধন মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
- অনেক বাচ্চারা ছোট সময় বেশি রাগী হয়ে থাকে। বেশি পরিমাণে কান্না করে বা পিতা মাতা কে জ্বালাতন করে। সে সময় আপনি বিরক্ত হবেন না এবং বাচ্চার উপর রাগ করা থেকে বিরত থাকবেন। আর প্রতিনিয়ত তাদেরকে আদর করে শান্তশিষ্ট রাখার চেষ্টা করবেন।
- বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় যে ব্যথাগুলো তারা অনুভব করে সে ব্যথা ভুলিয়ে রাখার জন্য তাদের পছন্দনীয় জিনিস যেমন বিভিন্ন রকমের খেলনাপাতি বাচ্চার সামনে দিয়ে রাখবেন। এবং আপনার পছন্দমত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াবেন। এতে করে বাচ্চার দাঁত উঠার সময় যে ব্যথা অনুভব হয় সেটা ভুলে থাকে।
- বাচ্চাদের যখন দাঁত উঠে থাকে তখন তারা কামড়ানোর জন্য চেষ্টা করে। তাই কামড়ানোর জন্য বাচ্চাদের হাতে নরম কোন বস্তু দিয়ে রাখতে হবে যাতে করে সেটিতে কামড়ালেও বাচ্চার কোন প্রকার ক্ষতি সাধন না হয়।
- দাঁত ওঠার সময় বাচ্চাদের যে ব্যথাটা হয় এটা প্রত্যেকটি বাচ্চার সহ্য করার ক্ষমতা থাকেনা। এজন্য মা-বাবার কর্তব্য তাদের বাচ্চাকে সময় দেওয়া এবং বাচ্চার সাথে খেলা করা।
তাই উপরোক্ত কাজ গুলি যদি মা বাবা যথাযথভাবে পালন করে তাহলে সে ক্ষেত্রে তার
বাচ্চার কোন প্রকার ক্ষতি হবে না। অনাহাসেই সুন্দরভাবে বাচ্চার দাঁত উঠে যাবে।
তাই আপনাদের কর্তব্য আপনাদের বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় তাদের খেয়াল রাখা।
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার কারণ উপরে আমরা আলোচনা করেছি বাচ্চাদের দাঁত না
উঠলে করণীয় সম্পর্কে। আমরা জানবো বাচ্চাদের সময় মত দাঁত না ওঠার কারণ
সম্পর্কে। প্রায় অনেক সময়ই লক্ষ্য করা যায় যে বাচ্চাদের খুবই তাড়াতাড়ি
দাঁত উঠে যায়, আবার কখনো কখনো বাচ্চাদের দাঁত উঠতে দেরি হয়। আর বাচ্চাদের
দাঁত দেরিতে উঠতে দেখা গেলে তখনই মা-বাবারা চিন্তার মধ্যে পড়ে যায়। চলুন আমরা
জেনে নেই কেন আপনার সন্তানের দাঁত উঠতে দেরি হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
বাচ্চাদের প্রথম যে দাঁত উঠে থাকে তাকে দুধ দাঁত। পরবর্তীকালে বাচ্চাদের স্থায়ী
দাত উঠে থাকে। আর বাচ্চাদের প্রথম যে দুধ দাঁত উঠে থাকে সেটা মুলত ৫-৬ মাসের
মধ্যে উঠে। কিন্তু সব বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সবসময় একরকম হয় না। অনেক বাচ্চাদের
ক্ষেত্রে ৯ মাস কিংবা ১০ মাস পাড় হয়ে যাওয়ার পর ও দাঁত উঠতে দেখা যায় না।
যদি কোনো বাচ্চাদের দাঁত উঠতে ১৪ কিংবা ১৫ মাস পাড় হয়ে যায় তাহলে এটা খুবই
চিন্তার একটি বিষয়। মূলত বাচ্চাদের দাঁত দেরিতে উঠার বিভিন্ন কারণ থাকে।
বিভিন্ন এ কারণ গুলোর মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ হলো বংশগত সমস্যা।
যদি কোনো বংশের কারো দেরিতে দাঁত উঠে থাকে বা দাঁতে কোন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে
সেই প্রভাব গিয়ে পড়ে তার পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ তার বাচ্চাদের উপর।
বংশের মানুষের কারো যদি এমন কোনো সমস্যা থেকে তাহলে সেটা বাচ্চার উপর পড়ে।
বাচ্চাদের দাঁত না ওঠার আরো একটি কারণ হচ্ছে তাদের শরীরে পুষ্টি না থাকা। শরীরে
পুষ্টির ঘাটতি থাকলে ও বাচ্চার দাঁত উঠতে দেরি হয়। বেশিরভাগ শিশুরাই মাড়ির
নিচে দাঁত নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর বাচ্চাদের যখন ছয় মাস হয়ে যায় তখনই মূলত
তাদের দাঁত দেখা যায়।
কখনো কখনো এর আগেই বাচ্চাদের দাঁত উঠে যায় আবার এর থেকে বেশিও সময় লাগতে
পারে। যদি এক দুই মাসের পার্থক্য হয় তাহলে এটা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন
না। নিচের মাড়ির মাঝখানে প্রথম দুটি দাঁত ওঠে। পরবর্তীতে উপরের মাড়ির মাঝখানে
চারটি দাঁত ওঠে। সব শিশুদেরই নির্দিষ্ট একটি বয়স সীমার মধ্যে দাঁত নাও উঠতে
পারে।
সেটার মধ্যে অনেক রকমের কারণ বিদ্যমান থাকে। কোন শিশু দাঁত যদি সাধারণত ১৬-১৮
মাসের মধ্যে না ওঠে তাহলে চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করুন। অনেক ক্ষেত্রেই
শিশুদের দেরিতে দাঁত উঠে থাকে। এটার অনেকগুলো কারণ রয়েছে সেটা আমাদের অজানা।
চলুন দেরিতে দাঁত উঠার কারণ জেনে নেই।
- মা কিংবা বাবার পরিবারে কারো যদি ছোটবেলায় দাঁত উঠতে দেরি হয়ে থাকে এর প্রভাব দিয়ে বাঁচার উপরে পড়ে। তাই যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে চিন্তা না করে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
- মূলত যেসব শিশুরা ৯ থেকে ১০ মাসের আগে বা কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ জন্মগ্রহণ করে তাদের দাঁত উঠতে দেরি হতে পারে।
- বাচ্চাদের বিভিন্ন রকমের রকমের সমস্যা যেমন অ্যামেলোজেনেসিস ইম্পারফেক্টা এসব কারণে দাঁত দেরিতে উঠতে পারে।
- দেরিতে বাচ্চাদের দাঁত ওঠার আরো কিছু কারণ হলো পুষ্টি ভিটামিন বা খনিজ এর ঘাটতি। তাছাড়াও ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাবে দেরিতে বাঁচার দাঁত উঠে।
তাই প্রত্যেকটি মা-বাবার এটি কর্তব্য যে তার বাচ্চাদের কোন প্রকার ভিটামিন খনিজ
ক্যালসিয়ামের অভাব যেন না থাকে। এসব বিষয়ে যদি মা-বাবারা খেয়াল রাখতে পারে
তাহলে বাচ্চার দাঁত খুবই তাড়াতাড়ি উঠবে।
শিশুর দাঁত ওঠার সময় বমি
শিশুর দাঁত ওঠার সময় বমি শিশুদের যখন দাঁত ওঠার সময় হয় তখন লক্ষ্য করা যায়
যে দাঁত উঠার সময় শিশুদের মাঝেমধ্যে বমি হয়ে থাকে। তবে সব শিশুদের ক্ষেত্রে
এরকম হয়না। অনেক বাচ্চা আছে যাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম থাকে। তাদের
যদি কোন কারণে ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে এ ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা ও কম থাকে। আর
এসব শিশুদের মধ্যেই দাঁত ওঠার সময় বমি করতে লক্ষ্য করা যায়।
আপনারা মূলত জানেন যে, বাচ্চাদের যখন দাঁত ওঠার সময় হয় তখন তাদের মাড়ি ছিদ্র
করে দাঁত বের হয়৷ আর মাড়ি ছিদ্র করে দাঁত ওঠার কারণে বাচ্চাদের ব্যথার অনুভব
হয়। ছোট শিশুদের ধৈর্য শক্তি মূলত কম হয়ে থাকে। এবং তাদের ব্যথা সহ্য করার
ক্ষমতা কম থাকে যার ফলে তাদের শরীরে জ্বর চলে আসে যার ফলে তারা কান্না করে।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা
আবার অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় যে বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় বমি করে থাকে।
সাধারণত বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় এই ছোট ছোট সমস্যা হয়ে থাকে। তবে সে
ক্ষেত্রে এত বেশি চিন্তায় না পড়ে ধৈর্য ধরতে হবে। পরবর্তীতে সব কিছু আপনা
আপনিই ঠিক হয়ে যাবে। আর যদি এই সমস্যাগুলো ঠিক না হয়ে থাকে তাহলে চিকিৎসকদের
সাথে পরামর্শ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দাঁত ওঠার সময় যেসব কারণে
বাচ্চাদের বমি হয়ে থাকে তা নিচে দেওয়া হল-
- বাচ্চাদের যখন দাঁত উঠার সময় ঘনিয়ে আসে তখন তাদের লালা গ্রন্থি গুলো অনেক বেশি পরিমাণে লালা তৈরি করে থাকে। আর এ বেশি বেশি লালা তৈরির কারণে দাঁত ওঠার সময় বাচ্চাদের বমি হয়ে থাকে। এটার কারণে মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের গলা ও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তার এ অনেক বেশি পরিমাণে লালাগুলো গিলতে অসুবিধা হয়।
- দাঁত ওঠার সময় শিশুদের খুবই যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা হয়ে থাকে। আর এটার ফলে তারা বিরক্তি অনুভব করে কান্না করে। তাই বিরক্ত অনুভব এবং কান্না করার কারণে তাদের বমি হয়ে থাকে।
- অনেক সময় শিশুদের দাঁতের মাড়ি ভেঙ্গে গেলে যন্ত্রণা আর প্রভাব গ্যাগ রিফ্লেক্স ট্রিগার করে থাকে যেটার কারণে বাচ্চাদের বমি হয়ে থাকে।
- শিশুদের মাড়ি মূলত কোমল বা নরম হয়ে থাকে। ঘা শিশুদের এ কোমল মাড়ি কে তাদের খাওয়ার জন্য অনুপোযোগী করে তোলে। শিশু স্তন্যপান পান করার সময় অতিরিক্ত বাতাস খেয়ে ফেলতে পারে যেটার কারণে তাদের বমি হয়।
দাঁত ওঠার সময় শিশুদের বমি হওয়া খারাপ একটি লক্ষণ। যেটা শিশুদের শরীরের জন্য
খুবই ক্ষতিকর দিক। তাই আপনার বাচ্চাকে এই সমস্যা থেকে বাঁচানোর জন্য বাচ্চার
দাঁত উঠার সময় খেয়াল রাখুন। আর এ বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে
ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় জ্বর
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় জ্বর আপনার সন্তানের জন্মের পর মূলত ৬ থেকে ৮ মাসের
ভিতরেই দাঁত উঠে। আর এই দাঁতকে বলা হয় দুধ দাঁত। দুধ দাঁত ওঠার সময় সাধারণত
বাচ্চাদের জ্বরের দেখা দেয়। বাচ্চাদের প্রথম দাঁত উঠার সময় প্রত্যেকটি
মা-বাবাই লক্ষ্য করেন যে তাদের বাচ্চাদের হালকা জ্বর হয়। জ্বর আসার কারণে
প্রত্যেকটি মা বাবারই মনের মধ্যে একটি প্রশ্ন জাগে যে, কেন দাঁত ওঠার সময়
বাচ্চাদের জ্বর হয়?
এবং তারা বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় সম্পর্কে জানে না। কিন্তু এই বিষয়ে কোন
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের প্রমাণ নেই, যেটা দাঁত ওঠার সময় বাচ্চাদের জ্বর হওয়ার
বিষয়টি প্রতিপন্ন করে। এটা মূল কারণ হলো বাচ্চাদের যখন দাঁত ওঠার সময় হয় তখন
বাচ্চাদের দেহের সামান্য পরিমাণে তাপমাত্রা বাড়তে পারে। কিন্তু সেটার কারণে
বাচ্চাদের শরীরে জ্বর এসে যাবে এমনভাবে তাপমাত্রা বাড়ে না।
বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় মূলত কেন জ্বর হয়ে থাকে সে বিষয়ে হয়তো
আপনারাবঅজানা। আপনাদের এই প্রশ্নটির অনেক রকমের উত্তর আছে। মূলত আপনার বাচ্চার
যখন দাঁত হয় তখন এটা মাড়ি ছিদ্র করে মাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে। আর যেহেতু
তার দাঁতটা মাড়ি ছিদ্র করে বেরিয়ে আসি তার জন্য বাচ্চার মাড়িতে ব্যথার অনুভব
হয়।
আর এই ব্যাথা অনুভবের ফলে আপনার বাচ্চার হালকা একটু জ্বর আসে। এছাড়াও আপনার
বাচ্চার যখন দাঁত ওঠে তখন ব্যাকটেরিয়ার কারণে ও শরীরে জ্বর দেখা দেয়। দাঁত
ওঠার সময় যখন বাচ্চার মাড়ি ছিদ্র হয় তখন অনেক ব্যাকটেরিয়া ছিদ্রর মধ্যে
দিয়ে বাচ্চার রক্তে প্রবেশ কর। যার ফলে বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময় জ্বরে দেখা
দেয়।
কিন্তু এই সামান্য জ্বরের ফলে আপনার বাচ্চাকে নিয়ে চিন্তা করবেন। মূলত দাঁত
ওঠার সময় বাচ্চাদের এই জ্বর হালকাভাবে এসে থাকি যার ফলে বাচ্চাদের কোন ক্ষতি
হয়। তাই এ বিষয়ে চিন্তিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং এর
স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করুন।
শেষ কথাঃ বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয়
উপরে আমরা বাচ্চাদের দাঁত উঠার সময়, বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় এবং আরোও
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে খুব সুন্দর ভাবে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বাচ্চাদের যখন দাঁত ওঠার সময় হয় তখন তারা বিভিন্ন রকমের সমস্যায় পড়ে। যেটা
মা-বাবার জানা খুবই জরুরি। আর বাচ্চাদের দাঁত ওঠার সময় মা বাবার কি কর্তব্য
সেটাও খুব সুন্দরভাবে এই আর্টিকেলটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
আশা করি আমার এই লেখাটি পড়ে আপনারা বাচ্চাদের দাঁত না উঠলে করণীয় এবং উপরের
বিষয়গুলো সম্পর্কে খুবই ভালোভাবে ধারনা নিতে পেরেছেন। আপনার বাচ্চার ক্ষেত্রে
যদি উপরের লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সচেতনতা
অবলম্বন করতে হবে। এবং আপনার বাচ্চার খুব ভালোভাবে যত্ন নিতে হবে।
এতক্ষণ আমার এই লেখাটির সাথে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। যদি আপনি আমার এই
লেখাটি পড়ার মাধ্যমে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের
সাথে শেয়ার করতে পারেন। যাতে করে আপনার বন্ধুও আমার এই আর্টিকেলটি পেয়ে উপকৃত
হতে পারে। আমাদের এই সাইটে প্রতিনিয়ত এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে লিখে
পাবলিশ করা হয়। তাই প্রতিনিয়ত এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সবার আগে পেতে আমাদের
এই ওয়েব সাইটটি ভিজিট করুন। সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমার এই লেখাটি আজ শেষ
করলাম আল্লাহ হাফেজ।
আর এইচ ড্রিম আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url